সকাল থেকেই আসতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। লাইসিয়াম-জিরো টু ইনফিনিটি গণিত উৎসব আজ। আয়োজকদের চোখে চোখ চরকগাছ। যা রেজিস্টেশন করেছে তার চেয়ে বেশি এসেছে শিক্ষার্থিী।গতকাল সারা রাত তারা কাজ করেছে।সিট ফেলানো, বেঞ্চ ঠিক করা, এক ওকে দাওয়াত দেয়া এরকম নানা কাজই করতে হয়েছে তাদের।
লাইসিয়াম গণিত ও বিজ্ঞান সংঘের এটা ৩য় গণিত উৎসব।আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা গণিত শিখুক খেলারছলে।গণিত যেন তাদের কাছে আতংক হয়ে দেখা না দেয়।সেই জন্য প্রতি বছরই আমারা আয়োজন করে থাকি গণিত উৎসবের।কথা গুলো বলছিলেন সংঘের সাধারণ সম্পাদক লিমন।
লাইসিয়াম গণিত ও বিজ্ঞান সংঘ ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তারা আয়োজন করে আসছে গণিত উৎসব, বিজ্ঞানমেলা, তারাচেনা, সেমিনারসহ নানা ধরণের অনুষ্ঠাণের। ইতিমধ্যে তারা অর্জন করেছে জাতীয় স্বীকৃতিও। ২০১০ সালে শ্রেষ্ঠ গণিত সংঘের মর্যাদা পায় তারা। অনিয়মিতভাবে প্রকাশ করে যাচ্ছে বোসন নামে একটি ত্রৈমাসিক বিজ্ঞান পত্রিকা।
আমরা যারা থানা শহরে বেড়ে উঠি তাদের কাছে এই ধরণের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়া অনেকটা স্বর্গ পাওয়ার মতোই ব্যাপার-বলছিলেন ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী উৎসব।ভূঞাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির শিক্ষার্থী লিথিনের মতে আরো বেশি বেশি আয়োজন করা উচিৎ এই ধরণের উৎসবের।
সাকাল ১০টা থেকে শুরু হয় পরীক্ষা। টানা দেড় ঘন্টা পরীক্ষা দেয়ার পর শুরু হয় প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। এটি পরিচালনা করেন আবদুস ছাত্তার খান। খুদে গণিতবীদদের মাজার মজার প্রশ্নের উত্তর দেন জিরো টু ইনফিনিটির সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তমাল, আর প্রভাত।ঝটপট প্রশ্নের চটপট উত্তর দিয়ে ১কপি করে জিরো টু ইনফিনিটি পুরুস্কার জিতে নেন খুদে গণিতবীদরা।
১ ঘন্টার বিতরতির পর বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয় সেমিনার।সেখানেও ছিলো শিক্ষার্থীদের স্বতস্ফর্ত সাড়া। বিকেল ৪টা থেকে শরু হয় পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠাণ।জুনিয়র সেকেন্ডারি বিভাগে প্রথম হন ভূঞাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নওরিন দোলা আর ২য় স্থান অধিকার করে ভূঞাপুর পাইলট বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তারেক রহমান।সেকেন্ডারি বিভাগে প্রথম হন ভূঞাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাফিয়া ইসলাম শান্তা আর ২য় স্থান অধিকার করে গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির শিক্ষার্থী সালমান রহমান সজিব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভূঞাপুর পাইলট বালক উচ্চ বিদ্যাণয়ের প্রধান শিক্ষক মহির উদ্দিন।প্রধান অতিথী ছিলেন মুন্সিগঞ্জের জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল ইসলাম খান।অনুষ্ঠাণে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক সংকর দাশ, সফি উদ্দিন তালুকদারসহ অনেকেই।
এই কয়দিনের পরিশ্রম আজ স্বার্থক হয়েছে। শিক্ষক অভিভাবকদের যে স্বর্তস্ফর্ত সাড়া আমরা পেয়েছি তাতে আমরা অভিভূত । বলছিলেন সংঘের কর্মী বায়জিদ। ভবিষ্যতে একটি বিজ্ঞানের গ্রন্থাগার গড়ে তুলতে চাই আমরা।যেখানে থাকবে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত বিজ্ঞানের নানা বই। গড়ে তুলতে চাই একটি বিজ্ঞানাগার। আমরা স্বপ্ন দেখি একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজের-বলছিলেন সংঘের সভাপতি সিজার।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে । তখনো পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে কিছু খুদে গণিতবীদ জটলা করছে , গণিতের নানা বিষয় নিয়ে করছে তর্কবিতর্ক। আবার কবে আয়োজন হবে এরকম অনুষ্ঠাণের-চোখে তদের এই প্রশ্ন। অনেক খেটেছে রাব্বি, কাজল, সাইফুল বিশেষ করে এম.এস.ডির সুহেল ভাই সহ অনেকেই।আপনাদের এই শ্রমেই হয়তো একদিন বেড়িয়ে আসবে আমাদের আগামীর রামানুজ আর্যভট্টরা।